কুরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াতের ফজিলত



কুরআন আল্লাহর কিতাব। এতে রয়েছে ১১৪ টি সুরা ও ৬৬৬৬ আয়াত। প্রত্যেকটি আয়াতই আলাদা আলাদা ফজিলত বহন করে। প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছে এ আয়াতগুলো। এর কোনোটির তেলাওয়াতে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার কোনোটির নিয়মিত আমলে মিলে অসীম নেয়ামতের স্থান জান্নাত।


প্রশ্ন জাগতে পারে যে, কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত কোনটি? কোনটির আমল নিয়মিত করলে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত লাভ করা যাবে। হ্যাঁ এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বর্ণনা করেছেন কোন আয়াতগুলি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এই আয়াতগুলো পাঠে কী ধরনের নেয়ামত অর্জন করবে বান্দা।


ফজিলত ও নেয়ামতে ভরপুর সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত হলো আয়াতুল কুরসি। কুরআনের সর্ববৃহৎ ও দ্বিতীয় সূরা ‘সূরা আল-বাক্বারা’র ২৫৫ নম্বর আয়াত। আয়াতটিতে মহাবিশ্বের ওপর আল্লাহর ক্ষমতার কথা বর্ণিত হয়েছে।


হজরত আবু জর জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি নাজিলকৃত সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন আয়াত কোনটি? তিনি বলে, আয়াতুল কুরসি। (নাসাঈ)


এ আয়াতটি ‘আয়াতুল কুরসি’ নামেই সব মুসলিমের কাছে পরিচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এর ফজিলত কী। এ আয়াত পাঠে কেমন সওয়াব হয়। আসুন জেনে নেই আয়াতটির গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত-


>> হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকে না। (নাসাঈ)


>> হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় থাকে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি শোয়ার আগে পড়বে আল্লাহ তার ঘর, প্রতিবেশীর ঘর এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। (বায়হাকি)


>> হজরত উবাই বিন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্বশ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু আল্ হাইয়্যুল কাইয়্যুম) তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাত তার বুকে রেখে বলেন, আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। (মুসলিম)


>>হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, সেটি হলো আয়াতুল কুরসি। যে ঘরে এটি পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। (মুসতাদরাকে হাকিম)


পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলিম বান্দাকে আয়াতুল কুরসির ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। কুরআন পড়ার ও কুরআন বুঝার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button *